ট্রেন বাড়ে, সেবার মান কমে

Passenger Voice    |    ০২:১৫ পিএম, ২০২৪-০২-১৪


ট্রেন বাড়ে, সেবার মান কমে

রেলপথ মন্ত্রণালয় গঠনের পর বিস্তর বিনিয়োগ করেছে সরকার। বাড়ছে ট্রেন ও যাত্রী পরিবহনের সংখ্যা। তবে সেবার মান কমছে। বিলম্বে ট্রেন ছাড়ার খবর পুরনো। এর মধ্যে ট্রেনে অপরিচ্ছন্নতার অভিযোগ বাড়ছে। নিম্নমানের পচা ও বাসি খাবার সরবরাহের খবরও মিলছে। এমন অবস্থায় খাবার মানসম্মত না হলে ক্যাটারিং প্রতিষ্ঠানের চুক্তি বাতিলের কথা বলেছেন রেলপথমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম।

বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রেলের গুরুত্ব বেড়ে যায়, বাড়ে বাজেটও। ওই বছরই রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী রুটে চালু হয় ধূমকেতু এক্সপ্রেস। ২০১১ সালের ৪ ডিসেম্বর যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে পৃথক করে রেলপথ মন্ত্রণালয় গঠন করে সরকার। ২০১১ সালেই চালু হয় রংপুর এক্সপ্রেস। ২০১২ সালে কালনী এক্সপ্রেস, ২০১৩ সালে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস, হাওর এক্সপ্রেস, কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস; ২০১৪ সালে বিজয় এক্সপ্রেস; ২০১৬ সালে সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ও মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস চালু হয়। পরের বছর বন্ধন এক্সপ্রেস চালু হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে ঢালারচর এক্সপ্রেস, টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস, বনলতা এক্সপ্রেস, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, বেনাপোল এক্সপ্রেস, কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস, জামালপুর এক্সপ্রেস, বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস, মিতালী এক্সপ্রেস, দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস, চিলাহাটি এক্সপ্রেস ও কক্সবাজার এক্সপ্রেস চালু হয়েছে। কিছু মেইল ও লোকাল ট্রেনও চালু হয়েছে। কিন্তু প্রায় সব ট্রেনের আসন ও ভেতরের পরিবেশ অপরিচ্ছন্ন। বাসি খাবার সরবরাহের অভিযোগ রয়েছে কিছু ক্যটারিং সার্ভিস প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। গতকাল সকালে রেলমন্ত্রী এ নিয়ে বৈঠক করেন। তিনি বলেছেন, খাবার মানসম্মত না হলে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ক্যাটারিং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে রেলওয়ের চুক্তি বাতিল করা হবে, যাত্রীদের ভালো খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। রেলমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে

ট্রেনে ক্যাটারিং সার্ভিসের চুক্তি অনুযায়ী মানসম্মত খাবার প্রদানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। খাবারের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী। যাত্রীদের অভিযোগ, ক্যাটারিং প্রতিষ্ঠানগুলো বাসি রুটি ও গন্ধযুক্ত খাবার পরিবেশন করে। যারা ক্যাটারিং পরিচালনা করেন তাদের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে, খাবারের মান ভালো করতে হবে। চুক্তি বাতিল করতে হবে খাবারের মান খারাপ হলে।

জানা গেছে, বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়ের ক্যাটারিং সেবাসংবলিত আন্তঃনগর ট্রেনের সংখ্যা ১১০টি। এর মধ্যে ১৮টি ট্রেন ক্যাটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজম সেলের আওতায় পরিচালিত হচ্ছে। আর ক্যাটারিং সার্ভিস পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও ১৮টি। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- হাবিব বাণিজ্য বিতান, বিল্লাল হোসেন অ্যান্ড ব্রাদার্স কোম্পানি, সুরুচি ফাস্টফুড, এএস করপোরেশন, শাহ আমানত এন্টারপ্রাইজ, কেআর ক্যাটারার্স, নিউ টিপটপ ক্যাটারার্স, আব্দুল্লাহ অ্যান্ড কোং, প্রগতি ক্যাটারার্স, সিরাজ মিয়া রেলওয়ে ক্যাটারার্স, ওয়াহদিকা সার্ভিসেস, ওবায়দুল হক অ্যান্ড সন্স, শরিফ হোটেল রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড ক্যাটারার্স, নূর ট্রেডার্স ও রেলওয়ে ক্যাটারার্স। রেলওয়ে ক্যটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজম সেলের আওতায় কেন্দ্রীয়ভাবে ৯টি ট্রেনে সেবা দেওয়া হচ্ছে। ট্রেনগুলো হচ্ছে- সোনার বাংলা এক্সপ্রেস, বনলতা এক্সপ্রেস, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, বেনাপোল এক্সপ্রেস, কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস, কক্সবাজার এক্সপ্রেস, পর্যটন এক্সপ্রেস ও মিতালি এক্সপ্রেস।

গতকাল সেবার মান প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী বলেন, যাত্রীদের অভিযোগ ট্রেন অপরিষ্কার এবং অনেক সময় ওয়াশরুম ব্যবহারের অযোগ্য অবস্থায় থাকে, যা মেনে নেওয়া যায় না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে পরিদর্শন বাড়ানোসহ নিয়োজিত পরিচ্ছন্নকর্মীদের মনিটরিং করার নির্দেশ দেন রেলমন্ত্রী।